আফছার,চট্টগ্রাম : চট্টগ্রাম বন্দরের মাধ্যমে তরল কোকেন আমদানির ঘটনায় করা চোরাচালান ও মাদক আইনের দুই মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ হয়েছে। বুধবার(৩০ অক্টোবর ), চট্টগ্রামের চতুর্থ অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ বেগম সিরাজাম মুনীরার আদালতে এই মামলার শুনানি অনুষ্ঠিত হয়। বেঞ্চ সহকারী ওমর ফুয়াদ জানান, দুই মামলায় মোট ৩১ জন করে সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ হয়েছে। আদালত আসামিদের ৩৪২ ধারায় পরীক্ষা গ্রহণের জন্য আগামী ১৯ নভেম্বর পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য করেছেন।
২০১৫ সালের ৭ জুন গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে চট্টগ্রাম বন্দরে একটি কনটেইনার আটক করা হয়। বলিভিয়া থেকে আমদানি করা এই কনটেইনারটি খান জাহান আলী লিমিটেডের নামে সূর্যমুখী তেল হিসেবে চট্টগ্রাম বন্দরে পৌঁছায়। আদালতের নির্দেশে কনটেইনার খুলে ১০৭টি ড্রাম থেকে নমুনা সংগ্রহ করা হয়। প্রাথমিক পরীক্ষায় কোকেনের অস্তিত্ব না পাওয়ায় ঢাকার বিসিএসআইআর এবং বাংলাদেশ ড্রাগ টেস্টিং ল্যাবরেটরিতে পুনঃপরীক্ষা করা হয়। এতে দুটিতে ৩৭০ লিটার তরল কোকেনের উপস্থিতি ধরা পড়ে।
এই ঘটনায় ২৮ জুন বন্দর থানায় মাদক আইনে মামলা করা হয় এবং আদালতের নির্দেশে মামলায় চোরাচালানের ধারা সংযুক্ত করা হয়। প্রথম তদন্তে আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান খান জাহান আলী লিমিটেডের মালিক নূর মোহাম্মদকে অব্যাহতি দেওয়ার সুপারিশ করা হয়। তবে আদালত মামলার অধিকতর তদন্তের জন্য র্যাবের একজন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার পদমর্যাদার কর্মকর্তাকে নির্দেশ দেন। পুনঃতদন্ত শেষে ২০১৭ সালে নূর মোহাম্মদের বিরুদ্ধে সম্পূরক অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়, যেখানে বলা হয় নূর মোহাম্মদ কোকেন আমদানির বিষয়ে অবগত ছিলেন।
২০১৯ সালের ২৯ এপ্রিল মাদক আইনের মামলায় দশজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয় এবং ২০২২ সালের ৭ ফেব্রুয়ারি বিশেষ ক্ষমতা আইনের মামলায় অভিযোগ গঠন করা হয়।
এই মামলার আসামিরা হলেন—খান জাহান আলী লিমিটেডের কর্মকর্তা গোলাম মোস্তফা সোহেল, মালিক নূর মোহাম্মদ, মোস্তফা কামাল, আইটি বিশেষজ্ঞ মো. মেহেদী আলম, মণ্ডল গ্রুপের বাণিজ্যিক নির্বাহী আতিকুর রহমান, কসকো বাংলাদেশ শিপিং লাইনস লিমিটেডের ব্যবস্থাপক একেএম আজাদ রহমান, সিএন্ডএফ কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম, নূর মোহাম্মদের ভাই মোস্তাক আহমদ খান, এবং যুক্তরাজ্য প্রবাসী ফজলুর রহমান ও বকুল মিয়া।
আসামিদের মধ্যে নূর মোহাম্মদ, মেহেদী আলম, মোস্তাক আহমদ খান এবং যুক্তরাজ্য প্রবাসী ফজলুর রহমান ও বকুল মিয়া পলাতক রয়েছেন। বাকি পাঁচ আসামির মধ্যে তিনজন জামিনে ও দু’জন হাজতে রয়েছেন।