নিজস্ব সংবাদদাতা : ফতুল্লায় মুদি দোকানের অন্তরালে মাদক ব্যবসার অভিযোগ পাওয়া গেছে এক দোকানির বিরুদ্ধে। দুই ছেলে ও এমনকি স্ত্রীকে দিয়েও আলকাছ নামে এক চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ী দীর্ঘদিন যাবৎ এ মাদক ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছেন বলে অভিযোগ করেছে স্থানীয়রা।
স্থানীয়দের অভিযোগ থেকে জানাগেছে, দীর্ঘ প্রায় দেড় যুগেরও বেশি সময় ধরে ফতুল্লা থানাধীন পিটালিপুল খালপাড়ের রাস্তায় (পূর্ব কতুবপুর গ্রাম) একটি মুদি দোকান দিয়ে অনেকটা প্রকাশ্যেই মাদক ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছেন আলমাছ। আর এ ব্যবসায় যোগ করেছেন তার দুই পুত্র ফয়সাল ও নিরবকে। শুধু তাই নয়, নিজ স্ত্রীকে দিয়েও মাদক ব্যবসা করাচ্ছেন বলে এমন গুরুত্বর অভিযোগ করেছেনও করেছেন স্থানীয়রা।
স্থানীয়রা জানান, মূলত মাদক ব্যবসায়ই হলো আলকাছের মূল ব্যবসা। কিন্তু তিনি একটি মুদি দোকান দেখিয়ে সমাজের চোঁখে ধুলা দিতে চাচ্ছে। বর্তমানে আলকাছের মাদক ব্যবসা এতটাই ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে যে, দূরদুরান্ত থেকে মোটরসাইলে করে তার কাছে মাদক নিতে আসে। শুধু তাই নয়, তার মাদক ব্যবসার প্রভাব আমাদের গ্রামেও পড়েছে। মাদকের কারণে কিশোর বয়সী ছেলে থেকে শুরু করে যুবক-বৃদ্ধা, সবাই মাদকে আসক্ত হচ্ছে। এভাবে মাদকের কড়ালগ্রাসে ধ্বংস হতে চলেছে কিশোর ও যুবসমাজ।
তারা বলেন, এই আলকাছকে কতবার যে র্যাব-পুলিশ গ্রেফতার করেছে তা গুনে শেষ করা যাবে না। কিন্তু কোন এক রহস্যজনক কারণে থানা পর্যন্ত না যেতেই ফিরে আসে চিহ্নিত এ মাদক ব্যবসায়ী। তাই এলাকার মানুষ অনেকটা হতাশায় পড়ে গেছেন। তাহলে কি আলকাছের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থাই নেয়া যাবে না? প্রকাশ্যে মাদক ব্যবসা করেও কি তিনি বহাল থাকবেন? এমন প্রশ্নও করতে দেখা গেছে স্থানীয়দের।
খোঁজ নিয়ে জানাগেছে, মাদক ব্যবসা বহাল রাখার জন্য আলকাছের নির্দেশে ছোট ছেলে নিরব এলাকায় গড়ে তোলেছে বিশাল এক কিশোরগ্যাং বাহিনী। এ বাহিনী দিনরাত ২৪ ঘন্টা দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে এলাকায় মহড়া দেয়। যার ফলে এত অপকর্ম করার পরও স্থানীয় ভয়ে তার বিরুদ্ধে কিছু বলতে পারে না।
জানাগেছে, যেখানে আলকাছ এ মাদক সা¤্রাজ্য গড়ে তোলেছেন তার খুব কাছেই রয়েছে হাজীগঞ্জ পুলিশ ফাঁড়ি। তাছাড়া মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্রটিও খুব বেশি দূরে নয়। এর মধ্যে কিভাবে আলকাছরা প্রকাশ্যে মাদক ব্যবসা করছে, এ নিয়েও দেখা দিয়েছে নানা প্রশ্ন।
এ বিষয়ে বেশ কয়েকজন স্থানীয় বাসিন্দা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, আসলে আলকাছ থানা পুলিশকে ম্যানেজ করেই মাদক ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে। কেননা, তিনি যদি থানা পুলিশকে ম্যানেজ না করেই মাদক ব্যবসা করতো, তাহলে এখানে তিনি দীর্ঘ প্রায় ১৬ বছর যাবত মাদক ব্যবসা করতে পারতো না। এ এলাকা থেকে শুরু করে পুরো শিবুমার্কেট-সস্তাপুর এলাকাবাসী সবাই জানে আলকাছ মাদক ব্যবসা করে। আর তাইতো বিভিন্ন এলাকা থেকে মাদকসেবীরা রোজ আসে মাদক নিতে। তাছাড়া এই পর্যন্ত বহুবার পুলিশ আলকাছকে আটক করেছে। কিন্তু একবারও তাকে থানায় নেয়া হয়নি। পুলিশকে টাকা-পয়সা দিয়ে কিছুক্ষনের মধ্যেই আবার এলাকায় ফিরে আসে এবং আবারও আগের স্টাইলে মাদক ব্যবসা শুরু করে। তাহলে এ থেকে কি বুঝা যায়? পুলিশ যদি না চায়, তাহলে শুধু এখানেই নয় কোথাও কোন মাদক ব্যবসায়ী থাকবে না। তাই মাদক নির্মূলে সর্ব প্রথম পুলিশেরই অগ্রনী ভূমিকা পালন করতে হবে।
স্থানীয় ওই বাসিন্দারা আরও বলেন, ৫ আগস্টের পর দেশ নতুন ভাবে স্বাধীন হয়েছে। তাই আমাদের নতুন করে আবার আশা জাগতে শুরু করেছে। আমরা এ সমস্ত মাদক ব্যবসায়ীদের গ্রেফতার ও চিরতরে মাদক ব্যবসা বন্ধের জন্য পুলিশ প্রশাসনের জরুরী হস্তক্ষেপ কামনা করছি।