স্টাফ রিপোর্টারঃ সার্ভার জটিলতায় অনলাইনে জমির নামজারি, খাজনাসহ নানা কাজে ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন সেবা নিতে আসা মানুষ। ইউনিয়ন ও উপজেলা ভূমি অফিসে ধর্না দিয়েও ভোগান্তির অবসান হচ্ছে না। সরকার নির্ধারিত ফি ও খাজনা জমা দিতে না পেরে অনেকেই ফিরে যাচ্ছেন। রোববার (০৮ ডিসেম্বর) সকালে নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) এর কার্যালয়ে ভুক্তভোগীদের সঙ্গে কথা বলে এ ভোগান্তির চিত্র জানা গেছে।
এতদিন সদর উপজেলা ভূমি অফিসে অনলাইনে জমির খাজনা দিতে আসা মানুষের দীর্ঘ লাইন দেখা গেলেও এখনকার চিত্র ভিন্ন। পূর্বে যেকোন সময়ের তুলনায় এখন সেবা নিতে আসা মানুষের সংখ্যা অনেক কম। তবুও দায়িত্বরত কর্মচারিরা তাদের সেবা দিয়ে পারছেন না। এর প্রধান কারণ হচ্ছে সার্ভার সমস্যা। সার্ভার জটিলতার কারণে নির্দিষ্ট ওয়েব সাইটে ঢুকতে পারছেন না কর্মচারিরা। ফলে খাজনা দিতে পারছেন না মানুষ। ফিরে যাচ্ছেন বাড়িতে।
সূত্র মতে, ভূমি উন্নয়ন করার জন্য সরকার অনলাইন সিস্টেম চালু করেন। সহজে দেশের ভূমি উন্নয়ন, কর উন্নয়ন, রাজস্ব আদায় ও বিভিন্ন সমস্যা সমূহ ডিজিটাল পদ্ধতিতে আদায় করার লক্ষ্য নিয়ে অনলাইন পদ্ধতি চালু করেন। এ অনলাইন পদ্ধতি চালু রাখতে হলে সার্ভারের গতিবিধি অধিক থেকে অধিকতর থাকার কথা থাকলেও সার্ভারের সমস্যা সমাধান হচ্ছে না। প্রতিনিয়ত নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলাধীন বিভিন্ন অঞ্চল থেকে ভূমি, নামজারি খারিজ, কর পরিশোধসহ বিভিন্ন কার্যক্রম করতে গেলে সার্ভারের সমস্যার কারণে আবেদন করা সম্ভব হচ্ছে না। মিনিটে মিনিটে সার্ভার ছেড়ে দিচ্ছে, যার ফলে সময়মতো ভূমি সেক্টর থেকে রাজস্ব কর আদায় হচ্ছে না। জানা গেছে, নারায়ণগঞ্জে ভূমিগুলোতে অফিসে প্রতিদিন আবেদন প্রতি ৭০ টাকা সরকার রাজস্ব পায়। কিন্তু সার্ভারের সমস্যার কারণে বহু নামজারি খারিজের আবেদন করা সম্ভব হচ্ছে না। হিসেবে জানা যায়, সার্ভারের এই করুন দশার কারণে শুধুমাত্র এই নামজারি আবেদন সেক্টর থেকেই হাজার হাজার টাকা রাজস্ব আদায় হতে বঞ্চিত হচ্ছে সরকার। এছাড়া সার্ভারের নিয়ন্ত্রণহীনতার কারণে ভূমি কর আদায় করাও সম্ভব হচ্ছে না। ফলে এক্ষেত্রেও সরকার বিপুল পরিমান রাজস্ব হতে বঞ্চিত হচ্ছে বলেও জানাগেছে।
এবিষয়ে জমির খাজনা দিতে আসা একাধীক ব্যক্তির সাথে কথা বললে তারা এ প্রতিবেদককে জানান, অফিসের কোন কর্মকর্তাই বলতে পারছেন না যে, কবে নাগাদ সার্ভার সমস্যা সমাধান হবে। সার্ভারের সমস্যার কারণে নতুন নামজারি আবেদন, ভূমি কর পরিশোধ কোন কিছুই করা সম্ভব হচ্ছে না।
এ বিষয়ে নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) লাইলাতুল হোসেন বলেন, গত ২৬ নভেম্বর থেকে আমাদের এ সমস্যাটা হচ্ছে। আসলে আমাদের সার্ভারের নতুন ভার্ষনে আপডেট করা হচ্ছে। এখন চলছে পরীক্ষামূলক সংস্করন। এ কারণে সার্ভারে কিছু সমস্যা হচ্ছে। যারফলে সেবা নিতে মানুষদের কিছুটা বিরম্বনায় পড়তে হচ্ছে।
তিনি বলেন, ইতোমধ্যে নন্দিপাড়া ভূমি অফিসের সার্ভারের জটিলতা কিছুটা সমাধান করা গেলেও অন্যান্য ভূমি অফিসগুলোর কাজ এখনও চলমান রয়েছে। আশা করছি, আমরা খুব শীঘ্রই এ সমস্যার সমাধান করতে পারবো।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি আরও বলেন, হ্যাঁ, এ সমস্যার কারণে সরকার কিছুটাতো রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছেই। তবে কি পরিমান রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছি, এটা হিসেব করে বলা যাবে। আমাদের কাছে প্রতিদিন গড়ে প্রায় ৩০টি আবেদন জমা পড়ে। আবেদন প্রতি ৭০টাকা ফি হলে প্রতিদিন গড়ে ২ হাজার ১শ টাকা রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছি। এছাড়া ভূমি অফিসেতো আরও অন্যান্য সেবা রয়েছেই। সেক্ষেত্রে সরকারেরতো কিছুটা ক্ষতি হচ্ছেই। তবে চেষ্টা চলছে, দ্রুত সময়ের মধ্যেই সার্ভার সমস্যা সমাধান হবে বলে আমরা মনেকরি।