আদালত সংবাদদাতা: অসুস্থতার কারণে এবারও আদালতে আনা হয়নি আলোচিত ব্যবসায়ী সাব্বির আলম খন্দকার হত্যার মামলার আসামী নারায়ণগঞ্জ জেলা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি জাকির খানকে। তবে এদিন তার অনুপস্থিতেই দুইজন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়।
রোববার (০৮ সেপ্টেম্বর) দুপুরে অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ (প্রথম আদালত) উম্মে সারবান তাহুরার আদালতে ওই সাক্ষীরা তাদের সাক্ষ্য প্রদান করেন। সাক্ষীর হলেন, মামলার ১১ নাম্বার সাক্ষী নাসির উদ্দিন মোল্লা ও ১২ নাম্বার সাক্ষী শেখ আলী আহম্মদ।
এ বিষয়ে আসামী পক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট রাজীব মন্ডল বলেন, জাকির খান ভীষণ অসুস্থ। তিনি হাসপাতালে ভর্তি থাকায় তাকে আজও আদালতে আনা হয়নি। তবে আদালতে তার বিরুদ্ধে দু’জন সাক্ষী তাদের সাক্ষ্য প্রদান করেছে। তারা আদালতকে জানিয়েছেন, এ হত্যার বিষয়ে তারা কিছুই জানেন না। তারা পুলিশকেও কোন জবানবন্দি দেননি বলে জানান। এসময় বাদি পক্ষের আইনজীবী তাদেরকে প্রশ্ন করেন, আপনারা কি ভয়ে এমন কথা বলছেন? সাক্ষীরা তখন বলে, ভয় পাবো কেন। সবারইতো মরতে হবে। আমরা যা সত্য তাই বলেছি।
এছাড়াও তিনি জানান, আজ আমরা আদালতের কাছে জাকির খানের জামিন চেয়েছিলাম। কিন্তু আদালত হাই কোর্টের একটি আদেশের কারণে সেই জামিন মঞ্জুর করেনি এবং আগামী ২২ সেপ্টেম্বর এ মামলার পরবর্তি কার্যদিবস ঘোষণা করেন। তবে আমরা আশা করছি, খুব শীঘ্রই জাকির খানের জামিন হবে এবং এ মিথ্যা মামলা থেকে তিনি মুক্তি পাবেন।
এদিকে এবারও জাকির খানের মুক্তির দাবিতে আদালতপাড়ার সামনে ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ লিংক রোড (চানমারি) থেকে একটি বিশাল বিক্ষোভ মিছিল বের করে ‘জাকির খান মুক্তি পরিষদ’র হাজার হাজার নেতাকর্মী। এসময় জাকির খানের মুক্তির দাবিতে মিছিলে থাকা হাজার হাজার নেতাকর্মী ও সমর্থকদের শ্লোগানে শ্লোগানে প্রকম্পিত হয়ে উঠে চানমারিসহ আশেপাশের এলাকা। পরে মিছিলটি নারায়ণগঞ্জের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে জেলা ও মহানগর বিএনপির সাবেক কার্যালয়ের সামনে গিয়ে সংক্ষিপ্ত সমাবেশের মধ্যদিয়ে শেষ হয়।
সমাবেশে বক্তরা বলেন, আজ আদালতে সাক্ষীরা বলেছে সাব্বির হত্যার বিষয়ে তারা কিছু জানেনা। শুধু আজই নয়, আমরা দেখেছি আগের সাক্ষীরা একই কথা বলেছে। মিথ্যা সারাজীবন মিথ্যাই থেকে যায়, সত্যা হয়না। অ্যাডভোকেট তৈমূর আলম সাহেব জাকির খানের জনপ্রিয়তায় ঈশার্ন্বিত হয়ে তাকে এ মিথ্যা মামলা দিয়ে ঘায়েল করার চেষ্টা করেছেন। আপনারা জানেন, ইতিমধ্যেই তৈমূর আলম যে একজন পল্টীবাজ, এটা বার বার প্রমাণ হয়েছে। তিনি দলের সাথে বেঈমানী করে ফ্যাসিবাদী সরকারকে সহযোগীতা করেছেন। তার নামেও মামলা হওয়া উচিৎ।
বক্তারা এসময় কঠোর হুঁশিয়ারি দিবে বলেন, আমরা এ মঞ্চ থেকে অবিলম্বে জাকির খানের মুক্তির দাবি জানাচ্ছি। জাকির খান দলের জন্য বহু জেল খেটেছেন, বহু নির্যাতিত হয়েছেন। ওই ফ্যাসিবাদী ও জুলুমবাজিদের অধ্যায় শেষ হয়েছে। তাই আমরা আশা করবো, খুব শীঘ্রই জাকির খানকে মুক্তি দেয়া হবে। যদি এ জনপ্রিয় নেতাকে মুক্তি দেয়া না হয়, তাহলে প্রয়োজনে আমরা গণ অনশনে বসবো। জাকির খানকে মুক্ত না করে আমরা কেউ ঘরে ফিরবো না।
‘জাকির খান মুক্তি পরিষদ’র আহ্বায়ক সলিমুল্লাহ্ করিম সেলিমের সভাপতিত্বে এসময় উপস্থিত ছিলেন, সদর থানা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক লিংকন খান, জেলা মৎস্যজীবী দলের সভাপতি এইচএম হোসেন, জাকির খান মুক্তি পরিষদ নেতা আমিনুল ইসলাম, মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক জিয়াউর রহমান জিয়া, জেলা গার্মেন্টস শ্রমিক দলের সভাপতি কাউসার আহমেদ, জেলা জাসাসের যুগ্ম আহ্বায়ক মো: জাকির আহমেদ, মহানগর মৎস্যজীবী দলের যুগ্ম আহ্বায়ক শ্রী ঋষিকেশ মন্ডল মিঠু, সদর থানা গার্মেন্টস শ্রমিক দলের যুগ্ম আহ্বায়ক শেখ সালেহ আহমেদ রনি, সদর থানা স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম আহ্বায়ক কাঞ্চন আহমেদ, জেলা ছাত্রদলের সাবেক যুগ্ম সম্পাদক রাকিব হাসান রাজ, নারায়ণগঞ্জ জেলা মৎস্যজীবী দলের সিনিয়র সহ সভাপতি মুন্সী মো শাহজালাল, সাংগঠনিক সম্পাদক মো: আল আমিন হৃদয়, সহ সভাপতি আজিজুল হক, দপ্তর সম্পাদক আদনান ইব্রাহিম, মহানগর মৎস্যজীবী দলের যুগ্ম আহ্বায়ক শাহীন আহমেদ, মীর রাজিব, সদর থানা গার্মেন্টস শ্রমিক দলের সাংগঠনিক সম্পাদক মো: খোকন, মো: সুমন, সদর থানা মৎস্যজীবী দলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক হাজী সোহেল, ফতুল্লা থানা মৎস্যজীবী দলের সভাপতি সলিমুল্লাহ হৃদয়, সাধারণ সম্পাদক জুনায়েদ শুভ, সাংগঠনিক সম্পাদক মোহাম্মদ ফয়সাল বেপারী, সহ সভাপতি সোহাগ রাজ, বন্দর উপজেলা মৎস্যজীবী দলের সভাপতি মো হাসান মাহমুদ, সাধারণ সম্পাদক মো রুবেল, মো: কালাম ও মো: কাইয়ূম,আরও অনেকে।